top of page

ঐতিহ্যের গুপ্তস্থল ঝিকিরা

  • Writer: Shrabanti Mitra
    Shrabanti Mitra
  • Dec 25, 2020
  • 6 min read

ree

একটা গোটা গ্রামকে কখনো হেরিটেজ ব্লক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে? যেরকম ভাবে হেরিটেজ বিল্ডিং ঘোষণা করা হয়? আমার জানা নেই। তবে, কখনো যদি পশ্চিমবাংলার কোন গ্রামকে ঐতিহ্যপূর্ণ বা হেরিটেজ ভিলেজ হিসবে ঘোষণা করতে হয়, তবে আমার মতে হাওড়া জেলার আমতার, ঝিকিরা নামক গ্রামটিকে অবশ্যই তালিকাভুক্ত করা উচিৎ। অন্যন্য জেলার মত হাওড়াতেও বেশ কিছু অঞ্চলে ঐতিহ্যপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে। তবে হাওড়ার আমতার ২নং ব্লকের অন্তর্গত ঝিকিরা গ্রামে, যে স্থাপত্যের নিদর্শন লুকিয়ে আছে, তা সত্যিই চমকপ্রদ।


ree

এই ছোট্ট অঞ্চল জুড়ে যে এতগুলো স্থাপত্যের চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে পারে, তা এখানে না এলে ধারণা করা যাবেনা। এখানকার স্থাপত্যের নিদর্শনগুলি এখনো অনেকটাই অচর্চিত এবং প্রচারের আলোর থেকে দূরে। তাই স্থানীয় মানুষজনও এগুলির ব্যাপারে একেবারেই সচেতন নয়।

তাই বিষ্ণুপুর বা হুগলীর মত জনপ্রিয়ও হয়ে উঠতে পারেনি এই অঞ্চল। এখানকার মানুষের সমস্যা হল, তারা নিজেরাই জানেন না, তাঁদের গ্রামে কি কি ঐতিহাসিক ধনসম্পদ লুকিয়ে আছে।


ree

নিদেনপক্ষে, ক’টা বাড়ি বা মন্দির আছে, মন্দিরের নাম আর কোন পথ দিয়ে গেলে এগুলি দেখা যাবে, তার কিছুই সঠিক ভাবে কেউ জানেন না। কোথাও কোন পথনির্দেশও দেওয়া নেই। নেই কোন বোর্ড, জঙ্গলের ভেতর কোন ইঙ্গিত চিহ্ন, এমনকি বেশীরভাগ মন্দিরে কোন ফলকও নেই। কোন মন্দির কখন খোলা হয় বা বন্ধ হয়, তার সুনির্দিষ্ট কোন সময় নেই। পুরোটাই পুরোহিত মশাইয়ের আগমন আর প্রত্যাগমনের ওপর নির্ভর করছে। ফলে, বাইরে থেকে আসা ইতিহাস ও স্থাপত্যানুরাগী মানুষজনের পক্ষে সঠিক ভাবে সবকটি জায়গা খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পরে এবং জঙ্গলের মধ্যে রাস্তা হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় গাছগাছালির ভেতর দিয়ে যেতে যেতে মনে হতে পারে, এ তো গভীর জঙ্গল! এখানে আর কোন মন্দিরের অস্তিত্ব থাকতেই পারেনা! তবে, এই সমস্ত পথ ধরেই রহস্যের কিনারা করবার মত, ক্লু খুঁজে খুঁজে হাঁটতে হাঁটতে, এভাবেই কোন না কোন টেরাকোটার কারুকাজ সম্বলিত প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়।


ree

এবার আসি, এই গ্রামের বিষয়ে। রাউতারা, ঝিকিরা ও আমরাগড়ি এই তিনটি গ্রামের পাশাপাশি অবস্থান। এর মধ্যে বিশেষত ঝিকিরা ও রাউতারা, এই দুটি গ্রামে বেশকিছু মন্দির ও প্রাচীন বাড়ি রয়েছে। প্রথমে আমি রাউতারার ভেতরের দর্শনীয় স্থানগুলির কথা সংক্ষেপে বলে, তারপর ঝিকিরার কথা বলব। আগেই বলে রাখি, প্রতিটা জায়গা সম্পর্কে খুব বেশী কিছু তথ্য পাওয়া যায়নি, তাই সবকটি জায়গার ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে কিছু লেখা সম্ভব হলনা। পরে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে পারলে, আবার লিখব এই বিষয় নিয়ে।



রাউতারা


ree

  • রথ- রাউতারায় বেশ খানিকটা ভেতরের দিকে এগিয়ে গেলে, প্রথমে বাঁদিকে পড়বে পঞ্চরত্ন শৈলীর প্রাচীন রথ। ১৮৫৩ সালে জমিদার রাম চৌধুরী রায় তৈরি করেন এই রথটি। রথের ওপরের লেখা অনুযায়ী শ্রী ননী লাল দে মিস্ত্রীর হাতে তৈরি এই রথ। রথে এও লেখা আছে যে, এই রথটি প্রথমে ১৯২৮ সাল ও পরে ১৯৮১ সালে সংস্কার হয়েছে। কাঠের ওপর কারুকাজ করা এই রথে সুন্দর অঙ্কনশৈলীর মাধ্যমে কৃষ্ণলীলার বিভিন্ন দৃশ্য দেখা যায়।


ree

  • জমিদার বাড়ি ও দোলমঞ্চ- রথের পর, দুদিকে তাকালেই দেখা যাবে, রায় পরিবারের জমিদার বাড়িগুলি। রথের পরেই একটি বাড়িতে পঙ্খের কাজযুক্ত তোরণ রয়েছে, যার ওপর নহবতখানা। তোরণের বাইরে রয়েছে টেরাকোটার কাজ করা একটি লাল রঙের আটচালা দোলমঞ্চ, এটি পরবর্তীকালে আবার রং করা হয়েছে বলে মনে হয়।

ree

রায় পরিবারের জমিদার বাড়ি


  • দামোদর মন্দির ও রাসমঞ্চ– এই বাড়িগুলির সামনেই রয়েছে বিখ্যাত দামোদর মন্দির। তিন খিলানের লাল রঙের এই মন্দিরটি ১৭৬২ সাল নাগাদ তৈরি। এটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছে ফলে টেরাকোটার কাজের পৌরাণিক চিত্রগুলি এখনো বেশ স্পষ্ট।


ree

দামোদর মন্দির


মন্দিরের ঠিক পাশেই উঁচু ভিতের ওপর রয়েছে আটকোনা রাসমঞ্চ। তবে এর বর্তমান অবস্থা জীর্ণপ্রায়।

ree

রাসমঞ্চ


ree

কৃষ্ণপদ লজ


গ্রামের রাস্তার ভেতরে রয়েছে আরো কিছু জমিদার বাড়ি। প্রথমেই নীল রঙের যে বাড়িটি চোখে পড়বে, সেটি বর্তমানে কৃষ্ণপদ লজ নামে পরিচিত। বাড়িটির যে নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়, তা বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। এখানে এই পরিবারের লোকজনও থাকেন।


ree

এর ঠিক পরের পাঁচখিলানযুক্ত দোতলা বাড়িটি আগে ছিল কাছারি বাড়ি। একতলায় দরজা ও জানলার ওপরে রয়েছে সুদৃশ্য কিছু মূর্তি। বাড়িটির একটি অংশ এখন বর্তমানে বিউটি পার্লার হিসেবে ব্যবহার হয়।


ree

  • শিবমন্দির ও সমাধি স্তম্ভ- এখান থেকে গ্রামের পথ ধরে খানিকটা এগোলে দেখা যাবে একটি বড় পুকুর, আর তার ধারে তিনটি শিবমন্দির। এগুলির অবস্থা বিশেষ ভালো না। তবে মন্দিরের গায়ের কারুকাজ যা আছে এখনো, সেটু্কু থেকেই অসামান্য স্থাপত্যকার্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায় ।


ree

শিবমন্দির


এই শিবমন্দিরের পাশে আছে রায় পরিবারের কয়েকজনের স্মৃতিস্তম্ভ; এগুলিও ভগ্নপ্রায়। তবে, পুকুরপাড়ে, পরপর এরকম স্মৃতিস্তম্ভ কেন রাখা হয়েছে, তা জানতে বেশ কৌতূহল হয়।


ree

শিবমন্দিরের আগে পরপর তিনটি স্মৃতিস্তম্ভ



ঝিকিরা


ree

  • কেরাণী বাটী- গ্রামের ভেতরে ঢুকতেই নামের ফলকে “কেরাণী বাটী” লেখা, ছোট উঠোন জোড়া প্রাচীর দেওয়া একটি বাড়ি দেখা যাবে, যার একদিকে রয়েছে একটি আটচালা মন্দির, আর বিপরীত দিকে সাবেকী দোতলা বাড়ি।


ree

কেরাণী বাটীর ভিতরের আটচালা মন্দির


  • সীতারাম মন্দির- কেরাণী বাটী থেকে একটু এগোলে লোহার গেট দিয়ে ঘেরা এই তিনখিলান বিশিষ্ট মন্দিরটি দেখা যাবে।

ree

১৭০০ সালে তৈরি এই মন্দিরটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, পরবর্তীকালে সংস্কার হয়েছে।


ree

রামায়ণের বিশেষ কাহিনীর নিদর্শন টেরাকোটার কারুকার্যে


  • গড়চন্ডী মন্দির- ১৭৯৫ সালে তৈরি এই পঞ্চরত্ন চন্ডী মন্দিরটির নির্মাতা শ্রী রামপ্রসাদ মিস্ত্রি। রায় পরিবারের দুর্বারচন্দ্র রায় তাঁর একমাত্র কন্যা পদ্মাবতীর আবদারে গড়চন্ডী দেবীর অধিষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন বলে শোনা যায়।

ree

এটি ঝিকিরার অত্যন্ত সুপরিচিত এবং জাগ্রত মন্দির বলেও শোনা যায় স্থানীয় মানুষের কাছে।

মন্দিরটিকে যে সাম্প্রতিককালে চড়া রঙের প্রলেপে সংস্কার করা হয়েছে, তা দেখলে বোঝা যায়।


ree

গড়চন্ডী দেবী


ree

মন্দিরের সামনে বিল্লেশ্বর শিবের নহবত


  • জয়চন্ডী মন্দির- গড়চণ্ডী মন্দিরের সংলগ্ন অঞ্চলেই অবস্থিত ১৭৫০ সালে স্থাপিত এই মন্দিরটিকে “সিদ্ধপিঠ” নামে আখ্যা দেওয়া হ্য়। এই অঞ্চলের সুবিখ্যাত রায় পরিবারের দুর্বারচন্দ্র রায় কঠোর তপস্যায় লিপ্ত হয়ে জয়চন্ডী দেবীর সাধনা করেন এবং সেই সিদ্ধিলাভ থেকেই সিদ্ধপিঠের নামকরণ। এই সিদ্ধপিঠ সংলগ্ন দুর্গা মন্দিরটি হুসেন শাহের পুত্র নসরত শাহের সমসাময়িক বলা হয়।


ree

জয়চন্ডী দেবীর মন্দির


এছাড়াও এই রাস্তা দিয়ে আসার সময়ে চোখে পড়বে ১৮৮৯ সালে স্থাপিত ঝিকিরা উচ্চ বিদ্যালয়, বাড়িটির সাবেকিয়ানা এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।


ree

ঝিকিরা উচ্চ বিদ্যালয়


  • শ্যামসুন্দর মন্দির- ১৬৯১ সালে স্থাপিত এই মন্দিরটি ঝিকিরার অন্যতম প্রাচীন মন্দির। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন জানকীরাম মল্লিক এবং স্থপতি গোপাল দাস শীল। আটচালা শৈলীর, তিনখিলান যুক্ত এই মন্দিরটি উঁচু ভিতের ওপর স্থাপিত।


ree

মন্দিরের নিম্নভাগে টেরাকোটার কারুকাজ


ree

এই মন্দিরের অদূরেই রয়েছে, ছোট ছোট কয়েকটি স্মৃতিস্তম্ভ। গোটা গ্রাম জুড়ে এই ছোট ছোট স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থিতি, মনে বিশেষ কারণের খোঁজে প্রশ্ন জাগায়।


ree

শ্যামসুন্দর মন্দিরের সামনে পরপর স্মৃতিস্তম্ভ


  • দামোদর জিউর নবরত্ন মন্দির- হাঁটতে হাঁটতে যে সময়টায় এসে মনে হবে, আর পাওয়া যাবেনা বোধহয়, ঠিক সেই সময়েই গ্রামের ঘন গাছগাছালির ফাঁকে হদিশ পাওয়া যাবে এই মন্দিরের।


ree

গোটা গ্রামের মধ্যে স্থাপত্য কারুকার্যের বিষয়ে সবচেয়ে চর্চিত মন্দির হল, এই তিন খিলানবিশিষ্ট, দামোদর জিউর নবরত্ন মন্দির। মন্দিরের ফলক অনুযায়ী রায় পরিবারের অধীনস্ত এই মন্দিরটি ১৮০০ সালে স্থাপন করা হয়, যার সেবাইতের নাম পুন্ডরীকাক্ষ রায়।


ree

দামোদর জিউ মন্দিরের সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে এই রাসমঞ্চ


  • সীতানাথ মন্দির- ত্রিখিলান বিশিষ্ট, আটচালা শৈলীর এই মন্দিরটি অপূর্ব টেরাকোটার কারুকার্যের অলংকারে সমৃদ্ধ। মন্দিরের মাঝখানে নিবদ্ধ প্রতিষ্ঠাফলক অনুযায়ী, মন্দিরটি ১৭৬৯ সালে, শ্রী সুকদেব মিস্ত্রী নির্মাণ করেন। এই মন্দিরের টেরাকোটার কাজ দেখে বোঝা যায়, লঙ্কা’র যুদ্ধের দৃশ্যাঙ্কন করা হয়েছে।

ree

দেওয়ালের ধারের কুলুঙ্গিতে দশাবতার এবং বিভিন্ন পৌরাণিক মূর্তি দেখা যায়। আমি ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এখানে গেছিলাম, তখন মন্দিরটির সংস্কার চলছিল।


ree

সীতানাথ মন্দির


এই মন্দিরের পাশে রয়েছে একটি পঞ্চরত্ন রাসমঞ্চ, তুলসীমঞ্চ ও একটি যজ্ঞমণ্ডপ।


ree

রাসমঞ্চ


ree

তুলসীমঞ্চ ও যজ্ঞমণ্ডপ


ree

এর পাশেই রয়েছে কাঁড়ার বাড়ির সিংহদুয়ার


এছাড়াও গ্রামের পথে হাঁটতে হাঁটতে আরও কয়েকটি পুরনো বাড়ি, মন্দির ও স্মৃতিস্তম্ভের দেখা পেয়েছিলাম। কিন্তু কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়ার ফলে, সেই জায়গাগুলির বিষয়ে লিখতে পারলাম না।


ree

ঝিকিরার কেরানী পাড়ার শীতলা মাঠের শিবমন্দির


ree

শীতলা মাঠের দোলমঞ্চ


গোটা রাউতারা ও ঝিকিরা অঞ্চল জুড়ে এরকম আরও অনেক স্থাপত্যের নিদর্শন আছে, যা এখনো অনাবিষ্কৃত বলে আমার মনে হয়।


ree

ঝিকিরার ঘরদুবড়া গ্রামের মন্দির


ree

ঝিকিরায় বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি


এই গ্রামে মন্দিরগুলি খুঁজে পেতে গেলে বলা ভালো আবিষ্কার করতে গেলে এবং সঠিক ভাবে সেগুলিকে দেখতে আর ছবি তুলতে চাইলে অসীম ধৈর্য এবং পায়ের জোরের প্রয়োজন। এছাড়াও আমার মনে হয় কলকাতা থেকে এই গ্রামের দুরত্ব এত বেশী হবার দরুন ও যানবাহনের সমস্যার কারণে, একদিনে কোন ভাবেই ঝিকিরা ও রাউতারা এই দুটি গ্রামের সবকটি জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব নয়। এরজন্য, কমপক্ষে দুটি আলদা দিন লাগবেই।


ree

মন্দিরের খোঁজে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ হদিশ পাওয়া জোড়া স্মৃতিস্তম্ভ


তবে, সেদিক থেকে দেখতে গেলে দুদিনও কিছুই যথেষ্ট নয়, এই সমস্ত অঞ্চল চেনবার আর জানবার জন্য। বারবার গেলে তবেই, একটা সামগ্রিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে এই অঞ্চলের রূপ সম্বন্ধে।


ree

জঙ্গলের ভেতর পঞ্চানন মন্দির, দুপাশের দুই সিংহ জমিদারী আভিজাত্যের ইঙ্গিত দেয়


তবে, আমার অনুরোধ, এই গ্রামের স্থানীয় কমিটি, হেরিটেজ কমিশন এবং বিশেষ ভাবে, এখানকার জমিদার বাড়িগুলির পরিবারবর্গের কাছে, যে তাঁরা যেন অন্তত এইসমস্ত মন্দির আর বাড়িগুলির সামনে একটি করে বোর্ড বসান এবং এখানে সাধারণ মানুষের পৌঁছবার জন্য পথনির্দেশের ব্যবস্থা করেন। তারপর তো রইল রক্ষণাবেক্ষণের কাজ… তবে, সেসব কথা এখন না তোলাই ভালো।


ree

ঝিকিরা স্কুলের কাছেই রয়েছে এই রক্ষাকালী মন্দির



বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ


  • কলকাতা থেকে ঝিকিরা আসতে হলে হাওড়া স্টেশনে নেমে, বাসস্ট্যান্ড থেকে ঝিকিরা যাবার সরাসরি বাস পাওয়া যায়। তবে, এই বাসের সংখ্যা খুবই কম আর প্রচুর ভিড় হয়। আগে থেকে লাইন দিয়ে না উঠলে বাসে বসার জায়গা পাওয়া যায়না। আর রাস্তা খারাপ থাকায় ঝিকিরা পৌঁছতে প্রায় ২ ঘন্টা ১৫ মিনিট সময় লেগে যায়।


  • এছাড়া ধর্মতলায় যেখানে ট্রামডিপো, ডেকার্স লেনের উল্টোদিকের দিকের রাস্তায়, সেখানকার সরকারি বাসস্ট্যান্ড থেকে আমতার বাস যায়। এটিও সংখ্যায় কম আর ঐ একই লাইন দিয়ে জায়গা পাওয়ার সিস্টেম। তবে, এটি তুলনামূলক তাড়াতাড়ি চলে। এরপর আমতা বাসস্ট্যান্ডে নেমে স্থানীয় ম্যাজিক গাড়িতে করে পৌঁছতে হয় ঝিকিরা। ফেরার সময়ও ঐ একই ব্যাপার। তবে, সন্ধ্যে ৬টা সাড়ে ৬টার পর ফেরবার বাস পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে।


  • আর যদি কেউ নিজের গাড়িতে অথবা গাড়ি ভাড়া করে যেতে চান, তাহলে দ্বিতীয় হুগলী সেতু ধরে কোন এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গেলে খুবই তাড়াতাড়ি পৌঁছনো যায়। তবে, আমতায় ঢোকার পর থেকে রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ থাকে।


  • এই গ্রামের সবকটি জায়গায় ভালো ভাবে যেতে গেলে, আগে থেকে একটা ম্যাপ বানিয়ে নেওয়া খুব দরকারি বলে আমার মনে হয়েছে।


  • ঝিকিরায় খাবারের দোকান বলতে কিছু ভালো ভালো মিষ্টির দোকান আছে। তাই ঝিকিরায় গেলে, ওখানকার মিষ্টি অবশ্যই নিয়ে আসবেন। তবে, দুপুরের খাবারের ক্ষেত্রে দু-একটি একেবারে সাদামাটা ডাল-ভাতের দোকান ছাড়া বিশেষ কিছু পাওয়া যাবেনা। তাই, সঙ্গে কিছু খাবার ও জল রাখা ভালো।


  • জঙ্গলের ভেতর মশা ও অন্যান্য পোকামাকড় থেকে সাবধান।


ree

 
 
 

Comments


© 2023 by NOMAD ON THE ROAD. Proudly created with Wix.com

  • Facebook
  • Instagram
bottom of page